শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে আ’লীগের সাবেক সভাপতিসহ গ্রেফতার ৯ নওগাঁর ১নং ভাঁরশো ইউনিয়নে কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত ১ আসামি গ্রেফতার রাজশাহীতে ফের বাস ও সিএনজি চালকের সংঘর্ষ আহত ২ রাজশাহীর পুঠিয়ায় ইটের মাপ কমিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ পাবনায় বালুবাহি ট্রলি চাঁপায় পুলিশ সদস্য নিহত ১জন আহত আটক ২জন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার সমিতি’র নতুন কমিটি গঠন রাজশাহীতে ভরা মৌসুমে সারের তীব্র সংকট! আলু বীজ রোপণ করতে পারছেন না চাষিরা! দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকা’র সাংবাদিক না ফেরার দেশে চলে গেলেন আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা চেক বিতরণ ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান

পাবনা প্রেসক্লাব সম্পাদক সৈকতের বিরুদ্ধে ভুয়া কাবিননামা করে বিয়ে ধর্ষন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে মামলা

Reading Time: 4 minutes

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা :
পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেশ টিভির পাবনা জেলা প্রতিনিধি, বাংলাদেশ প্রতিদিনের পাবনা প্রতিনিধি ও বিডি নিউজ২৪.কম এর পাবনা প্রতিনিধি সৈকত আফরোজ আসাদের বিরুদ্ধে প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া বিবাহ, বিবাহ পরবর্তি ধর্ষন এর অভিযোগে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা হয়েছে। মামলা পরবর্তি মিমাংসার কথা বলে কাবিন নামার মাধ্যমে বিয়ে করে স্ত্রী মর্যাদা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমের ৪ মাসের ভ্রূণ বা গর্ভের বাচ্চা নষ্টের অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী (ভিকটিম)। এ কাজে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে জাপান প্রবাসী সৈকতের বন্ধু জিয়ার বিরুদ্ধে। মামলাটি বর্তমানে ঢাকায় সিআইডির কাছে তদন্তনাীধন রয়েছে বলে ভুক্তভুগী বাদী বা ভিকটিম জানান। বাদীর বাড়ি রাজবাড়ি জেলায়। তিনি বর্তমানে ঢাকাতে বসবাস করেন। ক্ষতিগ্রস্থ ভিকটিম বা মামলার বাদী জানান, গত এক বছর আগে সৈকতের সাথে মোবাইলে পরিচয় হয় তার সাথে। এরপর সৈকত ঢাকায় গিয়ে বাদীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক্য গড়ে তোলে। গত ৬ মাস আগে বাদীকে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে করে শারীরিক সর্ম্পক্য গড়ে তোলে। বাদী জানান, ধর্মমতে বিয়ে করার পর যখন রেজিষ্ট্রি করতে বলি তখন সৈকত তালবাহানা শুরু করে। এরমধ্যে ভিকটিম গর্ভবতি হয়ে পড়ে। গর্ভবতি হওয়ার পর ভিকটিম সৈকতকে একাধিকবার রাষ্ট্রিয় আইন অনুযায়ি রেজিষ্ট্রিসহ কাবিননামা করতে বলে। এরপর থেকেই সৈকত মামলার বাদীর সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেয়। বাদী বিভিন্ন মাধ্যমে সৈকতের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে গত নভেম্বরে পাবনায় আসেন। বাদী পাবনায় এসে সৈকতকে মোবাইলে ফোন দেয়। সে সময় সৈকত জানায়, তার মা অসুস্থ, তাই তিনি ঢাকায় আছেন। বাদী ঢাকায় ফিরে সৈকতকে ফোন দেন। সৈকত মোবাইলে বাদীকে জানায়, তিনি পাবনায় চলে এসেছেন। এরপর বাধ্য হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ঢাকার নারী ও শিশু আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য ঢাকা সিআইডি দফতরে প্রেরন করেন। এ ঘটনা সৈকত জেনে গেলে আপোষ মিমাংসার জন্য বাদীকে প্রস্তাব দেয়। বাদী সৈকতের কথায় বিশ্বাস করে ও তার কথা মত ঢাকায় সৈকতের বন্ধু জাপান প্রবাসী জিয়ার অফিসে মিমাংসার জন্য বাদীকে ডেকে আনা হয়। বাদী সেখানে উপস্থিত হলে কৌশলে তাকে অচেতন করে ঔষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাতের মাধ্যমে ভ্রূণ বা গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করা হয়। জ্ঞান ফিরে পেলে বাদী পরবর্তিতে বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অবগত করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্তের স্বার্থে বাদীর মেডিকেল পরিক্ষা করেন। মামলার বাদী আমাদেরকে জানায়, মেডিকেল পরিক্ষায় ভ্রণ বা গর্ভের বাচ্চা হত্যার বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এ মাসের মধ্যেই আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। সংগত কারনে ভিকটিমের পরিচয় গোপন রাখা হলো। তবে ভিকটিমের বাড়ি রাজবাড়ি জেলায়। তিনি এখন ঢাকায় বসবাস করেন।
সৈকত আফরোজ আসাদ আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের চান্দাই গ্রামের মোঃ আশরাফ আলী মাষ্টার এর ছেলে। ২০০৫ সালে নারী কেলেংকারীর ঘটনায় পাবনা থেকে পালিয়ে ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। সে সময় সৈকত একটি গামের্ন্টসে কর্মরত ছিলো। গার্মেন্টসে কর্মরত থাকা অবস্থায় সেখানে একাধিক নারীর সাথে সর্ম্পক্য তৈরী হওয়ায় এবং ওই সব নারীদের দিয়ে অবৈধ কাজ করায় সে সময় ওই গামের্ন্টস থেকে চাকুরীচ্যুত হয়। এরপর ২০০৮ সালের শেষের দিকে পাবনায় ফিরে এসে, সে আবার সাংবাদিক পেশায় জড়িত হয়। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতার ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তার অপকর্মের মধ্যে অনুমতি ছাড়ায় এনজিও খুলে বিভিন্ন ব্যাবসায়ীকে চড়া সুদে ঋন দিয়ে সুদের ব্যবসা করার অভিযোগ। এতে অনেক ব্যবসায়ী চড়া সুদের মাশুল দিতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। টাকা না দিলে সাংবাদিকতার পেশাকে অপব্যবহার করে জোর করে ও পুলিশি ভয় দেখিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে। কথিত আছে টাকা দিতে না পারায় এক গ্রাহকের জমি জোর পুর্বক রেজিষ্টি করে নেই। অনুমতি না নিয়েই ফুড কোম্পানী স্থাপন করে অবৈধ এনার্জি ড্রিংকস তৈরীর নামে সেক্স সিরাপ তৈরী করে তা বাজারজাত করে। পরবর্তিতে আইনি জটিলতায় সে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। এরপর ২০২০ সালে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চাঁদাবাজিসহ জমি ক্রয়-বিক্রয়ের নামে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে থাকে। তার আক্রোশ থেকে রেহায় পায়নি সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাস। মোবারক বিশ্বাসের ভাই এর সাথে জমি নিয়ে বিরোধের সুযোগে মোবারক এর ভাইকে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে ভিডিও প্রচার করে। কারন হিসাবে জানা যাৃয়, মোবারককে জেলে দিয়ে মোবারকের ভাই এর জমি কম দামে কিনে তা বাজার মুল্যে বিক্রি করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার ইচ্ছা। গত ৪ বছরে মেলার নামে জুয়া, চাঁদাবাজিও ভয়ভীতি দেখিয়ে কোটি টাকার সম্পর্ত্তি কেনার কথা প্রচলিত রয়েছে সৈকতের বিরুদ্ধে। সৈকতের চাঁদাবাজির অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে, সেই সময়ে কর্র্মরত সময় টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধির চাকুরী চলে যায়। সৈকত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের হল শাখার নেতা ছিলেন। পরবর্তিতে পাবনায় বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়লে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক নেতাসহ জনপ্রতিনিধিদের সাথে ঘনিষ্টতা গড়ে তুলে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার সত্যতা জানতে সৈকতের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে জানা গেছে, মামলার কারনে সৈকত সচরাচর লোক চক্ষুর বাইরে থাকে। মাঝে মধ্যে প্রেসক্লাবে এসে বেশিরভাগ সময় মোবাইলে কথা বলতে দেখা যায়। বিষয়টি পাবনার সাংবাদিক মহলের সবাই অবগত থাকলেও সৈকত ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ কোন প্রকার প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। পাবনার সাংবাদিক সমাজসহ সচেতন মহল মনে করে, সৈকতের অর্থের উৎস ও তার অপরাধের যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদন্ত পুর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া দরকার।
সৈকত সাংবাদিকতা করে বিলাসবহুল ফ্লাটে আয়েশি জীবন যাপন করে কিভাবে। সাংবাদিকতা করে কত টাকা বেতন পান সচেতন মহলের প্রশ্ন। সৈকতের বিলাসি জীবন যাপন ও অবৈধ অর্থের উৎস খুজে বের করে অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে অন্যান্য সাংবাদিকরাও এমন অপকর্মে জড়িয়ে সাংবাদিক পেশাকে কলংকিত করবে। এদিকে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করেন মামলার বাদী। একটি সুত্র জানায় ২০০৫ সালে ঢাকায় গামেন্টর্সে চাকুরীকরাকালীন সময়ে অপরাধী চক্র ও প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক্য গড়ে ওঠে সাংবাদিক সৈকতের। সেই ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এদিকে আরেকটি সুত্র উল্লেখ করেছে ২০ লাখ টাকা বাদীকে দিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে মামলাটি ফাইনাল নিতে সৈকত গং কাজ করে যাচ্ছে। পাবনায় কর্মরত সাংবাদিকদের দাবি ইতিপুর্বে বাণিজ্য মেলার নামে জুয়া খেলার আয়োজন করে সৈকত-ফজলু গং সাংবাদিক সমাজকে হেয় করেছে। এবার সৈকত এর বিরুদ্ধে প্রতারনার মাধ্যমে বিয়ে ও ভ্রূন হত্যার অভিযোগ উঠেছে। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত হওয়ায় তাকে পাবনা প্রেসক্লাবের নির্বাহি কার্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদসহ সকল পদ থেকে বহিস্কার করা হোক এবং অপরাধ প্রমানিত হলে তাকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান জানান। উল্লেখ্য পাবনা ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আজিজুর রহমান আরজুর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় সৈকতের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে ঢাকায় মামলা করেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। সৈকতের বিরুদ্ধে দুবাই টাকা পাচরের অভিযোগও রয়েছে। কারন হিসাবে তার এক ঘনিষ্ঠজন জানান, মেলার আয়োজক দুবাই বসবাস শুরু করেছে। বাণিজ্য মেলায় লটারীর মাধ্যমে জুয়ার আয়োজন করে প্রেসক্লাবের নামে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সৈকত। সেই টাকাসহ আরো বিভিন্ন যায়গা থেকে আদায়কৃত অর্থ দুবাই পাচার করেছে মেলার আয়োজক লিটনের মাধ্যমে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com